আমার বাংলা টিভি ডেস্ক/ রিপন মারমা কাপ্তাইঃ দীর্ঘ ১৮মাস পর সারা দেশের ন্যায় কাপ্তাই বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দ্বার খুললো রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। প্রথমদিন থেকেই শিক্ষার্থীদের সরব উপস্থিতি চোখে পড়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় ১৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পাঁচ দিনের পাঠ দানে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অনন্য ভুমিকা থাকায় বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের সন্তোষজনক উপস্থিতি ছিল।
এছাড়াও পাঠদান চলা কালে মাস্ক পরিধান সামাজিক দুরত্ব বজায় রাখা সহ সকল প্রকার স্বাস্থ্যবিধি মানা থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা রাখতে সকল সরঞ্জামাদি ব্যবহার নিশ্চিত করেন বিদ্যালয় পরিচালনা পিডিবি কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কাপ্তাই বিদ্যাুৎ উন্নয়ন বোর্ড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান।
করোনা প্রাদুর্ভাবের কারনে গেলবছর১৭ মার্চ থেকে
দেশের সবধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানবন্ধছিল। সংক্রমণ কিছুটা কমে আসায় প্রথম ধাপে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের সব স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলেছে ১২ তারিখের শারীরিক উপস্থিতিতে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আগে থেকেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত করার নির্দেশনা ছিল।
সে অনুযায়ী প্রস্তুতিও নেওয়া হয়েছে। শ্রেণি কার্যক্রম প্রস্তুতি ছাড়াও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের বরণ করতে সাজানো হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শ্রেণিকক্ষ। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুইটি শ্রেণির পাঠদান অনুষ্ঠিত হবে। সে অনুযায়ী একটি রুটিনও প্রণয়ন করা হয়েছে।
স্কুল খোলার ৫ম দিনের রাঙ্গামাটি বিভিন্ন স্কুল ঘুরে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের আগমন উপলক্ষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সাজসাজ রব বিরাজ করছে।
কাপ্তাই৷ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান জানান, ‘সাড়ে আটটা থেকে স্কুল শুরু হওয়ার নিয়ম থাকলেও শিক্ষার্থীরা সকাল আটটার মধ্যেই স্কুলে চলে এসেছে। আমরা স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করেই শিক্ষার্থীদের স্কুলে প্রবেশ করিয়েছি। হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোয়া, শরীরের তাপমাত্রা মাপা, শরীরে স্যানিটাইজ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রথম শিফট সাড়ে আটটা থেকে শুরু হবে। সকাল সাড়ে এগারটার দ্বিতীয় শিফটেও তাই হবে। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি সন্তোষজনক । স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীদের স্কুলে প্রবেশ করানো হয়েছে।
স্বাস্থ্যবিধি মানার পাশাপাশি বিশেষ মনিটরিংয়ের কথাও জানান। ‘হ্যান্ডস্যানিটাইজার, শরীরের তাপমাত্রা নির্ণয়, মাস্ক পড়ে শিক্ষার্থীদের স্কুলে প্রবেশ করানো হচ্ছে। যারা মাস্ক পড়ে আসেনি তাদের স্কুল থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে। ক্লাশে মনিটরিং করা হবে। আর শিক্ষকদের একটি গ্রুপ রাখা হয়েছে তারা আজ ক্লাস না নিয়ে শিক্ষার্থীরা স্বাস্থ্যবিধি মানছে কিনা শুধু মনিটরিং করবে।
এদিকে সকাল থেকেই স্কুলের সামনে ছাত্র ছাত্রী ভিড় দেখা গেছে অভিভাবকরাও স্কুলে সন্তানকে নিয়ে বাসা থেকে বের করে স্কুল অবধি পৌঁছানো পর্যন্ত অভিভাবকদের মধ্যে দুশ্চিন্তা লক্ষ্য করা গেছে। করোনা মহামারিতে সন্তানকে চোখে চোখে রেখে আজই বাসার বাইরে অন্য কোথাও রেখে যাওয়া। উৎকণ্ঠা নিয়েই গণমাধ্যমকে জানালেন, ‘এ সময়ে মেয়েকে স্কুলে দিতে এসে দুশ্চিন্তা হচ্ছে। বাসার বাইরে বের হলেই নিরব একটা ভয় কাজ করে নিজের মধ্যে।’
সেসময় তিনি আরোও জানিয়ে শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, সব শিক্ষার্থী, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও কর্মীদের সারাক্ষণ মাস্ক পরে থাকা এবং শ্রেণীকক্ষে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া, কোনো শিক্ষার্থী শিক্ষক-শিক্ষিকা অথবা কর্মীর করোনাভাইরাসের উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।
নির্দেশনায় শিক্ষকদের অনুরোধ করা হয়েছে, প্রতিটি ক্লাসের শুরুতে একটি অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য দেওয়ার জন্য। কোনো ছাত্র যেন ক্লাসের মাঝখানে বের হয়ে না যায়, সেটা নিশ্চিত করার কথাও বলা হয়েছে। নির্দেশনায় অনুযায়ী, শিক্ষার্থীদের বলা হয়েছে— তারা যেন যে কোনো ধরনের অসুস্থতার কথা শিগ্রই অভিভাবক ও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জানায়। কোনো জরুরি কারণ ছাড়া শ্রেণীকক্ষের বাইরে না যাওয়ার কথাও বলা হয়েছে। পাশাপাশি অভিভাবকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, পরিবারের কোনো সদস্য করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে যেন তারা শিগ্রই এই তথ্যটি প্রধান শিক্ষককে জানান। একইসঙ্গে, শিশুদের বাইরের খাবার খেতে নিরুৎসাহিত করার ওপরেও জোর দেওয়া হয়েছে।