মুফতি ফারুক সিদ্দিকী “হিউম্যান রাইটস্ ডিপ্যান্ডার অ্যাওয়ার্ড-২০২১ এ ভূষিত

ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে মুফতি ফারুক সিদ্দিকীসহ সম্মানিত ব্যক্তিরা। 

 

আমার বাংলা টিভি ডেস্ক : চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সাবেক খতীব ও বর্তমান পূর্ব নাসিরাবাদ তুলাতুলি জান্নাতুল ফেরদাউস জামে মসজিদের খতিব বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন মুফতি ফারুক সিদ্দিকী “বন্ধু সোস্যাল ওয়েলফেয়ার” সোসাইটির পক্ষ থেকে হিজড়াদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বলিষ্ঠ অবদান রাখার জন্য “হিউম্যান রাইটস্ ডিপ্যান্ডার অ্যাওয়ার্ড-২০২১ এ ভূষিত হয়েছেন।

বুধবার (২ জুন) মুফতি ফারুক সিদ্দিকী প্রতিবেদককে জানান, ভার্চুয়াল এক অনুষ্ঠানে ৩০ মে রবিবার সকাল ১১ টায় “বন্ধুর চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম হিরুর সভাপতিত্বে ”জুম” এর মাধ্যমে উক্ত অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান।

এসময় আরো বক্তব্য রাখেন বন্ধুর কার্যনির্বাহী পরিচালক সালেহ আহমদ। এছাড়া ভার্চুয়াল এই অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশস্থ অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনের ফাস্ট সেক্রেটারী মিঃ সাচচা ব্লুমান, কানাডা হাইকমিশেনর পলিটিক্যাল কাউন্সিলর রোজেলি লাপান্টে, সুইজারল্যান্ড দূতবাসের রাষ্ট্রদূত আলেক্সজান্ড্রা বার্গভন লিন্ডে, ‘বন্ধু’র পরিচালক উম্মে জারিফ কান্তা, আন্না রাব্বি প্রমুখ।

মুফতি ফারুক সিদ্দিকী ২০০০ সাল থেকে নিয়ে সামাজিক এনজিও বন্ধু’র সাথে সমাজের প্রান্তিক এই জনগোষ্ঠী, হিজড়া সন্প্রদায়ের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও জীবণমান উন্নয়নে বলিষ্ঠ ভুমিকা পালন করে আসছেন। তিনি তাদের অধিকার বিষয়ে ইতিমধ্যে বাংলাদেশে প্রচলিত চারটি ধর্ম ইসলাম হিন্দু, বৌদ্ধ ও খৃস্টান ধর্মের স্কলারদের নিয়ে “হিজরা অভিজ্ঞান” নামে একটি বুকলেট রচনাও গ্রন্থনা করেন এটি বন্ধুর পক্ষ হতে প্রকাশিত হয় যা সরকারী বেসরকারী সর্ব মহলে প্রশংসিত হয়েছে। ইতিমধ্যে বন্ধু সোশ্যাল ওয়েল ফেয়ার সোসাইটির হিজড়া অধিকার আন্দোলনের ফলশ্রুতি হিসাবে সরকার হিজড়া জনগোষ্ঠীকে তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে ও জাতীয় সংসদে আইন পাশ হয়। এখন এই নিরীহ পথহারা প্রান্তিক জনগোষ্টি বিভিন্নভাবে ভাবে তাদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার কন্ঠে দাবী উচ্চারন করতে সক্ষম হচ্ছেন।

মুফতি ফারুক সিদ্দিকী বলেন, হিজড়ারাও মানুষ। যেখানে মানুষ থাকে সেখানে তারাও থাকবে, তার থাকার অধিকার। কিন্তুু বাস্তব পরিস্থিতিতে হিজড়ারা তাদের পারিবারিক সামাজিক ও যাবতীয় নাগরিক অধিকার হতে বঞ্চিত। সমাজের বেশিরভাগ মানুষ এদের অবহেলার চোখে দেখে, যেন মনে হয় এরা কোন মানুষই নয়। অথচ এরা কারো সন্তান কারো ভাই কারো বোন, কারো আত্মীয়, বাস্তব সত্য হলো সামাজিক অবস্থার কারণে তারা তাদের পরিবার পরিজন পৈতৃক সম্পত্তি সহ যাবতীয় অধিকার হতেই বঞ্চিত। তারা সমাজে মানবতার একটি অংশ এদেরকে অবহেলিত বা বঞ্চিত রেখে সমাজ উন্নয়ন অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। মুফতি ফারুক সিদ্দিকীসহ বারজন বিশিষ্ট নাগরিককে অ্যাওয়ার্ড ভুষিত করা হয়। তারা হলেন মোঃ জাহিদূল ইসলাম আজাদ, মোঃ মিজানুল হক মিতু, বহ্নিবালা, সুক্তা, মোহনা মোঃ পারভেজ জারা, এডভোকেট সাইফুল ইসলাম তালুকদার, মোঃ এসএম শরীফুল ইসলাম, তপন কুমার সরকার প্রমুখ।

ভার্চুয়াল এই অনুষ্ঠানটির সঞ্চালনা ও পরিচালনায় ছিলেন রুহুল রবিন খান ও বন্ধু এর প্রোগ্রামার মসিউর রহমান রাসেল। উল্লেখ্য মুফতি ফারুক সিদ্দিকী সমাজকে HIVAlDS মুক্তকরণ বিভিন্ন সামাজিক ও বেসরকারী সংস্হার সহযোগীতায় শত শত মসজিদের ইমাম ও খতিব ও ধর্মীয় নেতাদের নিয়ে কাজ করেছেন। এছাড়াও তিনি একজন মানবাধীকার কর্মী, পথকলিদের জন্যও কাজ করেন।

তিনি হিজড়া জনগোষ্ঠী সহ বেশ কজন দূঃস্হ মহিলাদের সেলাই মেশিন প্রদান করেন এবং কয়েকজন ছিন্নমূল গরীব ও দুঃস্থ মহিলাকে টিনের ঘর বানিয়ে মাথা গোজার স্থান করে দেন। এছাড়া গরীব মেধাবী ছেলেদের পরীক্ষার ফি প্রদান, বই কিনে দিয়ে সাহায্য করা ও কম্পিউটার প্রশিক্ষণে সাহায্য ও স্বাবলম্বী হতে ড্রাইভিং লাইসেন্সের খরচদানে সাহায্য প্রদান করেন। তিনি এসব সামজিক কর্মে ধর্নাঢ্য ব্যক্তিদের সক্রিয় ভাবে এগিয়ে আসারও আহবান জানান। www.amarbangla.tv