চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
আমার বাংলা টিভি ডেস্কঃ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনের নির্বাচনী কার্যক্রমের সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে আজ বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারী) দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনের অয়োজন করা হয়।
নাসিমন ভবনস্থ দলীয় কার্যালয়ে মাঠে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনের প্রধান সমন্বয়কারী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
উপস্থিত ছিলেন-মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেন, বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, সাবেক মন্ত্রী আলহাজ¦ জাফরুল ইসলাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবুল হাসেম বক্কর, কেন্দ্রিয় বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশীদ, মহানগর বিএনপির যুগ্ন আহবায়ক এম এ আজিজ, মোহাম্মদ মিয়া ভোলা, এস এম সাইফুল আলম, শফিকুর রহমান স্বপন, কাজী বেলাল উদ্দিন, যুগ্ম আহবায়ক ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, চাকসু ভিপি নাজিম উদ্দিন, মহানগর বিএনপির সদস্য আলহাজ¦ এরশাদ উল্লাহ, হারুন জামান, ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন, গাজী সিরাজ উল্লাহ, মঞ্জুরুল আলম মঞ্জু, কামরুল ইসলাম।
সংবাদ সম্মেলন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহামুদ চৌধুরী চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেন, চসিক নির্বাচনকে অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসাবে পুলিশকে নিরপেক্ষ ভুমিকা পালন করার কথা থাকলেও অতিউৎসাহী বেশ কিছু সদস্য এলাকায় এলকায় বিএনপি নেতা কর্মীদের বাড়ি তল্লাশি চালাচ্ছে। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন বানচাল করার জন্য আওয়ামী লীগ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করছে। গত দুই-তিনদিন ধরে পতেঙ্গা থেকে শুরু করে কালুরঘাট পর্যন্ত বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়িতে হানা দিচ্ছে পুলিশ। অনেক কাউন্সিলর প্রার্থীসহ দায়িত্বশীল নেতাকর্মীকে এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার হুমকি দিচ্ছে।
বুধবার (২০ জানুয়ারী) রাতে চট্টগ্রাম নগর বিএনপি কার্যালয়ে যুবলীগ ছাত্রলীগের হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনার প্রতিবাদে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি আরো বলেন, সরকারি দল ও পুলিশের শত উস্কানি সত্বেও বিএনপি নির্বাচনী মাঠ থেকে সরে যাবে না। আওয়ামী লীগ একটি অগণতান্ত্রিক দল। তাদের নির্বাচন কমিশনের কাছে কখনও সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আশা করা যায় না। তারপরও দেশের মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় বিএনপি নির্বাচনের মাঠে নেমেছে। কারণ বিএনপি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ না করলে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার দেশের নির্বাচনী সংস্কৃতি বিলুপ্ত করে ফেলবে।
তিনি বলেন, আগামী যে কয়দিন আছে, সেই দিনগুলো কীভাবে কাটবে তা পুরোপুরি অনিশ্চিত। গতকালও নাসিমন ভবনস্থ নির্বাচনী কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা হামলা করেছে। প্রার্থীর গাড়ি ভাঙচুর করেছে। তাদের ক্যাম্প তারা ভেঙে ইস্যু তৈরি করে বিএনপির কার্যালয়ে হামলা করেছে। যেখানে নেতাকর্মীরা অনুপস্থিত, সেখানে বিএনপির নেতাকর্মীদের পরিবারকে হেনস্থা করা হচ্ছে। অথচ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাজ জনগণের সুরক্ষা নিশ্চিত করা, জনগণের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া। সেটি না করে তারা নির্বাচনী কাজকে বাধাগ্রস্থ করছে। তারা এমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি করেছে, যাতে মানুষ নির্বাচনের আগ্রহ হারিয়ে ফেলে, ভোটকেন্দ্রে না যায়। গেলেও তাদের নিয়ন্ত্রিত অবস্থায় পুরো নির্বাচন চলে, সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই নির্বাচনের তো কোনো প্রয়োজন নেই। আমীর খসরু চৌধুরী পুলিশকে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী হিসাবে নাগরিকদের নিরাপত্তা বিধানসহ নিরপেক্ষ থাকার আহ্বান জানান।
সংবাদ সম্মেলনে গুরুপূর্ণ তথ্য
গতকাল রাতে (২০-০১-২০২১) নাসিমন ভবনস্থ বিএনপির দলীয় ও মেয়র প্রার্থী ডা: শাহাদাত হোসেনের নির্বাচনের প্রধান কার্যালয়ে পরিকল্পিত ভাবে আওয়ামী ছাত্রলীগ কর্মীরা হামলা চালিয়েছে এবং মেয়র প্রার্থী শাহাদাত হোসেন ও আবু সুফিয়ানের গাড়ি ভাঙ্গচুর করেছে । এসময় মেয়র প্রার্থী শাহাদাত হোসেন ও আবু সুফিয়ান সহ বিএনপির বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতা অবস্থান করছিল। পুলিশ এই ব্যাপারে কোন ব্যবস্থা নেয় নি। আমরা মনে করি প্রশাসনের সহযোগীতায় এইটি পরিকল্পিত হামলা।
গতকাল বুধবার (২০-০১-২০২১) সন্ধ্যায় বাকলিয়ার থানার খাজা রোড বলির হাট এলাকায় যুবদলের পক্ষ থেকে ধানের শীষের গণসংযোগ চলাকালে পূর্ব বাকলিয়া ওর্য়াড আওয়ামীলীগের কাউন্সিলর প্রাথী হারুনের সর্মথিত সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। এত ১০/১৫ জন বিএনপি নেতা কর্মী আহত হয়।
গতকাল (২০-০১-২০২১) সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত চট্টগ্রাম মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় নেতা কর্মী ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের বাসায় পুলিশ তল্লাশি চালিয়েছে। মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এস এম সাইফুল আলম, এস কে খোদা তোতন, শফিকুর রহমান স্বপন, বায়েজিদ থানা পুলিশ মেয়র প্রার্থীর মিডিয়া সেলের সদস্য সচিব মো: ইদ্রিস আলী, পাচঁলাইশ থানা পুলিশ মহানগর বিএনপির সদস্য মনজুর আলম মনজু, থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন, থানা যুবদলের আহবায়ক মোহাম্মদ আলী সাকী, হালিশহর থানা পুলিশ মহানগর যুবদলের সহ-সভাপতি এম এ গফুর বাবুল, উত্তর পাঠানটুলি ওর্য়াডের কাউন্সিলর প্রার্থী মো: মহসিন, ডবল মুরিং ও পতেঙ্গা থানা যুবদলনেতা নয়ন, সামিউল, ইউসুফ, ডবল মুরিং থানা বিএনপির সা: সম্পাদক বাদশা মিয়া, বিএনপি নেতা হালিম, ইলিয়াছ, সিরাজুল ইসলাম সহ বিভিন্ন নেতাকর্মীর বাসায় তল্লাশি চালিয়েছে। এর আগে ১৮-০১-২১ তারিখে মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মোহাম্মদ মিয়া ভোলার বাসায় তল্লাশি চালিয়েছে।
পাহাড়তলীতে মেয়র প্রার্থী ডা: শাহাদাত হোসেনের গণসংযোগের পর একটি কলেজের অধ্যক্ষ দিয়ে সাজানো একটি মামলা করানো হয়েছে। এই মামলায় মহানগর বিএনপির সদস্য মনজুর আলম চৌধুরী মনজু সহ ৮১ জন নেতা কর্মীকে আসামী করা হয়েছে।
খুলশীতে বিএনপি নেতা আব্দুল হালিম স্বপন, বাকলিয়ায় থানায় দক্ষিন বাকলিয়া ওর্য়াড কাউন্সিলর প্রার্থী ইয়াছিন চৌধুরী ছেলে ছাত্রদল নেতা সানি,ও কালু, হালিশহরে যুবদল নেতা মুরাদ, মাবুদ ও কিশোরকে গ্রেফতার করেছে।