করোনা সংকটে অজ্ঞাত কারণে কর্মী ছাটাই করল ইউএসটিসি

করোনা সংকটে অজ্ঞাত কারণে কর্মী ছাটাই করল ইউএসটিসি

 

চট্টগ্রামঃ বিশ্বব্যাপী করোনা সংকটে যখন চারদিক দিশেহারা, বিপদ মোকাবিলায় যখন মানবতার হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে একজন অন্যজনের প্রতি, ঠিক তখনই বিনা নোটিশে কর্মী ছাটাই করলো চট্রগ্রামের প্রথম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ‘ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি’ (ইউএসটিসি)।

জানা যায়, বিগত ৫ এপ্রিল বিনা নোটিশে কর্মচ্যুত করা হয় বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল হাসাপাতালের (বিবিএমএইচ) ১৯ জন দক্ষ নার্স, ৪ জন আয়া এবং ১১ জন স্টাফকে। প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে এমন সিদ্ধান্তের পক্ষে কোন কারন দর্শানো হয় নি।

ছাটাইকৃত কর্মীরা প্রত্যকেই দীর্ঘদিন থেকে এই প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে পূর্বের কোন অভিযোগ না থাকায় হঠাৎ কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তে অনেকেই হতবিহবল হয়ে পড়েন। চাকরিচ্যুতের সিদ্ধান্তে অনেকেই কান্নায় ভেংগে পড়েন। অনেক পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটি দেশের এই সংকট সময়ে চাকরি হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন।

ধরনা করা হচ্ছে, নিম্ন আয়ের এই সেবকগণের বেতন না দেয়ার উদ্দেশ্যের কারনেই কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে এর আগেও মুজিববর্ষ উদযাপনে অনীহা এবং মুজিববর্ষ উপলক্ষে টানানো ব্যানার ছিড়ে জাতির জনক শেখ মুজিবের জন্মশতবার্ষিকী অবমাননা করার মতো ঘটনা ঘটে। এই অবমাননাকর ঘটনার পর পরই বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অনুষদের সাধারণ ছাত্রছাত্রী সম্মলিতভাবে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিল করেন।

সাম্প্রতিক সময়ে স্বনামধন্য এই প্রতিষ্ঠানটির এরকম বিতর্কিত অসংখ্য কালো সিদ্ধান্ত প্রদানের মূল কুশীলব হিসেবে চিহ্নিত করা হয় প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যানের পাকিস্তানি কাশ্মিরী সহধর্মিণীকে। পরিচালনা পর্ষদের কোন দায়িত্বে না থাকলেও এই পাকিস্তানি মহিলার তৈরী করা বিশেষ এক চক্রের বিশেষ উদ্দেশ্যেই এসকল ঘটনা ঘটছে। মুজিববর্ষ উদযাপনে বাধা দেয়ার মুল হোতাও স্বাধীনতা বিদ্বষী এই পাকিস্তানি নারী বলে ধারণা করছেন অনেকেই।

ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজি’ (ইউএসটিসি) এর কতৃপক্ষের দায়িত্ব থাকা এই       (01711747473,  01711566655,) দুই নাম্বারে বেশ কয়েকবার ফোন করা হলে ফোনটা কেটে দেওয়া হয়।

কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মানিক মিয়া আমার বাংলা ডট টিভিকে বলেন, সরকারি কোর্স না থাকায় ১৯ জন নার্সকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আমরা যতটুকু জানি একমাত্র ডিপ্লোমাধারীদের রেজিস্ট্রেশন লাগে। সরকার এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে বছর দুয়েক আগে। অথচ এই লোকগুলোকে ২০-২৫ বছর আগে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। তখন এই কর্তৃপক্ষ যোগ্যতার ভিত্তিতে তাদেরকে নিয়োগ দিয়েছিল। এখন হঠাত করে এমন অমানবিক সিদ্ধান্ত নেয়ায় আমরা কষ্ট পেয়েছি।

তিনি বলেন, দেশের এই সংকটময় সময়ে এই নার্স, আয়ারা দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। তাদের বেতনটাও দেয়া হয় নি। আয়া এবং সুইপারদের তো রেজিস্ট্রেশন লাগে না, তাদেরকে কেন কোন বৈধ কারণ দেখানো ছাড়া চাকরিচ্যুত করা হল বুঝলাম না। আমাদের একটা বৈধ ট্রেড ইউনিয়ন আছে। তারা ট্রেড ইউনিয়নের মাধ্যমে আলাপ-আলোচনা করে কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারতো। কিন্তু কোন আইনের ধারার তোয়াক্কাই করে নি।

তিনি আরো বলেন, যেহেতু লকডাউনের কারণে আমাদের লোকগুলো ঘরবন্দি তাই আমরা কোন আন্দোলনে যাচ্ছি না। আজকে আমরা জেলাপ্রশাসক, পুলিশ কমিশনার, মেয়র এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল মহোদয়, খুলশী থানা ও র‍্যাব-৭ বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি। আমরা আগামী শনিবার একটা মিটিং ডেকেছি। মিটিংয়ের পরে আমরা আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিব।