রোহিঙ্গাদের তৃতীয় বহর ভাসানচরে

চট্টগ্রাম বোট ক্লাব থেকে চারটি জাহাজে ভাসানচরের উদ্দেশে রওয়ানা দেন । 

আমার বাংলা টিভি ডেস্কঃ কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামে নিয়ে জড়ো করা রোহিঙ্গাদের তৃতীয় বহর নোয়াখালীর ভাসানচরে পৌঁছেছে। চট্টগ্রাম বোট ক্লাব থেকে চারটি জাহাজে ভাসানচরের উদ্দেশে রওয়ানা দেন বাংলাদেশে আশ্রিত ভাগ্যবঞ্চিত এই জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা। আজ প্রায় দুই হাজার রোহিঙ্গার সেখানে গেছেন।

শুক্রবার সকাল সাড়ে নয়টায় পতেঙ্গা বোট ক্লাব থেকে ১ হাজার সাতশ’ ৭৪ জন রোহিঙ্গাকে নিয়ে ভাসান চরের উদ্দেশ্য রওনা দেয় নৌ বাহিনীর চারটি জাহাজ। শুক্র ও শনিবার দুই দিনে তিন হাজারের মতো রোহিঙ্গাকে নৌবাহিনীর জাহাজে ভাসনচরে নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন এ বিষয়ে ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকা শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কর্মকর্তারা। জাহাজে ওঠার আগে কয়েকজন রোহিঙ্গা জানিয়েছেন, তাদের আত্মীয়- স্বজন বর্তমানে ভাসানচরে আছেন। তাদের কাছ থেকে সেখানকার সুন্দর পরিবেশ ও সুযোগ-সুবিধার কথা জানার পর স্বেচ্ছায় সেখানে যাচ্ছেন তারা।

বৃহস্পতিবার দুপুরে উখিয়া ডিগ্রি কলেজ মাঠ থেকে ১৭টি যানবাহন সারিবদ্ধ ভাবে চট্টগ্রামে রওনা দেয়। এসব পরিবহনে সাড়ে আটশ’র বেশি রোহিঙ্গা ছিলেন। বিকেলে আরও কিছু বাসে হাজার খানেক রোহিঙ্গা চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের রাখা হয় পতেঙ্গা বিএফ শাহীন কলেজের অস্থায়ী ক্যাম্পে ।গত বছরের ৪ ও ২৯ ডিসেম্বর দুই দফায় ৩ হাজার ৪৪৬ জন রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ভাসানচরে থাকা-খাওয়ার সুব্যবস্থার কথা নানা মাধ্যম থেকে শুনে কক্সবাজারের রোহিঙ্গারা সেখানে যেতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

মিয়ানমারে সেনা বাহিনী ও কট্টরপন্থি বৌদ্ধদের নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণসহ নানা বর্বর নির্যাতনের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে রাখাইন রাজ্য থেকে পালাতে শুরু করে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী। সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা। বর্তমানে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ১০ লাখ ছাড়িয়ে গেছে।

৩ হাজার ১০০ কোটি টাকা ব্যায়ে ভাসানচরে স্থাপনা তৈরি করেছে বাংলাদেশ সরকার। কক্সবাজারের ক্যাম্প গুলোতে গাদাগাদি করে থাকা জনসংখ্যার চাপ কমাতে এক লাখ রোহিঙ্গাকে সেখানে নেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। ভাসানচরের পুরো আবাসন প্রকল্প বাস্তবায়ন ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।