শ্রমিকের শরীরে ছ্যাকা দিলেন রেস্টুরেন্ট মালিক

কিডস্ জি রেস্টুরেন্টে নির্যাতনের শিকার হন আশরাফুল।

আমার বাংলা টিভি ডেস্ক : টাকা চুরির অভিযোগে গাইবান্ধার সদর উপজেলার আশরাফুল ইসলাম (২০) নামে এক শ্রমিকের শরীরে গরম ছেনি দিয়ে ছ্যাকা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকার কিডস্ জি নামে একটি অনলাইন রেস্টুরেন্ট মালিকের বিরুদ্ধে। ধানমন্ডির মিতালী রোডের মিতালি টেলিকমের সামনের ১৭/এ নম্বর গেটের কিডস্ জি রেস্টুরেন্টে (অনলাইনে পার্সেল দেয়) অভিযুক্ত মালিকের নাম রহিত মিয়া।

বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) সকালে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) হারুন অর রশিদ জানান, আশরাফুলের পিঠে ও হাতে গরম ছ্যাকার একাধিক চিহ্ন রয়েছে। বুধবার সকালে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে। সুস্থ হয়ে উঠতে সপ্তাহ খানেক সময় লাগবে।

আশরাফুল ইসলাম গাইবান্ধা সদর উপজেলার বোয়ালি ইউনিয়নের ফলিয়া গ্রামের আব্দুল আজিজ মিয়া ছেলে।

এর আগে, গত ৫ এপ্রিল কিডস্ জি রেস্টুরেন্টে নির্যাতনের শিকার হন আশরাফুল। পরদিন ৬ এপ্রিল রাতে বাড়ি চলে আসেন তিনি।

সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আশরাফুল ইসলাম বলেন, টাকা চুরির অপবাদ দিয়া রুমে আটকায়া আমারে স্কেল আর কাঠ দিয়া মারধর করা হয়। আমার হাতের নখে প্লাস দিয়ে চাপ দেওয়া হয়। শুধু তাই না, গরম ছেনি দিয়া আমার পুরো শরীরে ছ্যাকা দিছে। চুরি করি নাই বইলা যতই মালিক রহিত মিয়ার হাত ধরি, ততই তিনি মারধর করেন। তিনি বলেন, তুই টাকা নিছিস স্বীকার কর, না হলে ঘড়ির কাঁটা যতক্ষণ ঘুরবে ততক্ষণ তোর মাইর থামবে না।

আশরাফুল আরও জানান, শেষ পর্যন্ত জীবন বাঁচাতে টাকা চুরির কথা স্বীকার করে বলছি, হ আমি টাকা নিছি। তখন রহিত আমার কাছে জোর করে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নিছে। আমারে দিয়া টাকা চুরির কথা স্বীকার করায় তা আবার নিজের মোবাইল ফোনে রেকর্ড করছে। এরপর রহিত মিয়া আরও বলছে, বাড়িতে যাইয়া কোনো সমস্যা করবি না, যদি কিছু করিস, তাহলে তোর ভিডিওটা ভাইরাল করে দেব।

তিনি বলেন, বাড়ির পাশের রাকিব নামে একজনের মাধ্যমে ঢাকার ওই রেস্টুরেন্টে কাজ নেই। গত ১ এপ্রিল কাজ শুরু করি। আমি রুম ঝাড়ু দিতাম, একটু মোছা দিতাম আর ছাদের ফুল গাছে পানি দিতাম। গত ৫ এপ্রিল হঠাৎ করে আট হাজার টাকা চুরির অপবাদ দেয় আমারে।

এ ঘটনায় রেস্টুরেন্ট মালিক রহিত মিয়া ও সহযোগী মিজানুরের কঠিন শাস্তির দাবিও জানান আশরাফুল।

এ বিষয়ে আশরাফুলের বাবা আব্দুল আজিজ মিয়া বলেন, জোর করে টাকা চুরির স্বীকারোক্তি নিয়া ভিডিও করছে, সাদা কাগজে সই নিছে। এরপর রেস্টুরেস্ট মালিক রহিত আশরাফুলকে দিয়া ফোন করায় টাকা দিতে বলছে। পরে বাড়ি থেকে আট হাজার টাকা পাঠানোর পর তারে ছাইড়া দেয় রহিত। এরপর ৬ এপ্রিল রাতে শরীরে ক্ষত নিয়া আশরাফুল বাড়িতে ফেরে।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজার রহমান জানান, ঘটনাস্থল ঢাকায়, সে কারণে ঢাকায় গিয়ে সংশ্লিষ্ট থানা কিংবা আদালতে মামলা করতে হবে।