শুভ আষাঢ়ী পূর্ণিমা আজ

 প্রতীকী ছবি 

 

রিপন মারমা রাঙ্গামাটি/ আমার বাংলা টিভি ডেস্কঃ বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন‌্যতম ধর্মীয় উৎসব আষাঢ়ী পূর্ণিমা আজ। দিনটি ব‌ৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত‌্যান্ত পবিত্র। এ পূর্ণিমা তিথিতে রাজকুমার সিদ্বার্থের মাতৃগর্বে প্রতিসন্ধি গ্রহন, গৃহত‌্যাগ, সারানাথের ঋষি পতন মৃগদাবে পঞ্চবর্গীয়, ভিক্ষুদের কাছে ভগবান বৌদ্ধের ধর্মচক্র প্রবপূর্বতন সুত্র দেশনা হয়েছিল।

একই তিথিতে শ্রাবস্তীর গন্ডম্ব বৃক্ষমূলের প্রতিহায‌্য ঋষির, প্রদর্শন ,মাতৃদেবীকে ধর্মদেশনার জন‌্য তুষিতস্বর্গে গমন এবং ভিক্ষুদের ত্রৈমাসিক বর্ষাবাস আরম্ভও হয়। গৌতম বৌদ্ধ যেমন নিজ প্রচেষ্টায় জীবনের পূর্ণতা সাধন করে মহাবোধি বা আলোকপ্রাপ্ত হয়েছিলেন এবং জগজ্জ‌্যোতি বৌদ্ধপ্রাপ্ত হন, তেমনি ভাবে পর্ণচন্দ্রের মতো নিজে জীবনকে রিদ্র করাই প্রতিটি বৌদ্ধের প্রচেষ্টা। amarbangla.tv

আষাঢ়ী পূর্ণিমার অনুষ্ঠানের মধ‌্য দিয়ে বৌদ্ধরা এই প্রচেষ্টার প্রতি তাদের অঙ্গীকার নবায়ন করে থাকে। শুধু সাধারণ বৌদ্ধ নয়, ভিক্ষুদের কাছেও আষাঢ়ী পূর্ণিমা বিশেষ তাৎপর্য বহন করা হয়। পূর্নিমাকে কেন্দ্র করেই গৌতম বৌদ্ধের জীবনে নানা গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। এক আষাঢ়ে পূর্ণিমায় গৌতম বুদ্ধ সিদ্ধার্থ রুপের মাতৃগর্বে প্রবিষ্ট হয়েছিলেন। amarbangla.tv

বর্ণিত আছে, কপিলাবস্তু নগরে আষাঢ় মাসের পূর্ণিমা সাড়ম্বরে উদযাপিত হতো। এক আষাঢ়ী পূর্ণিমা রাজা শুদ্ধোধনের মহিষী রানী মহামায়া উপোসথব্রত গ্রহন করেন। সে রাতে রানী মহামায়া সপ্নমগ্না হয়ে দেখলেন যে চারদিক থেকে পাল দেবগন এসে পালম্কসহ তাকে নিয়ে গেলো হিমালয়ের পর্বতোপরি এক সমতল ভূমির উপর।সেখানের মহামায়াকে সুউচ্চ এক মহাশাল বৃক্ষতলের রেখে দেবগণ সশ্রদ্ধ ভঙ্গিমায় এক পাশে অবস্থান দাঁড়িয়ে পড়ল। এরপর দেবগণের মহিষীরা এসে মায়াদেবীকে হিমালয়ের মানস সরোবরে সাজিয়ে দিলেন। খানিক দুরেই একটি শুভ্র রজতপর্বতে ছিল একটি সুবর্ণ প্রাসাদ। চারদিক থেকে পাল দেবগণ মহারাজা পূর্ণপালম্কসহ দেবীকে সেই প্রাসাদের নিয়ে গিয়ে দিব‌্যশয‌্যায় শুয়ে দিল।

ভিক্ষুদের অন‌্যতম বাৎসরিক আচার বর্ষাবাস শুরু হয় আষাঢ়ী পূর্ণিমাতে ।শেষ হয় আশ্বিনী পূর্ণিমাতে।বর্ষাকালে সিক্ত বসনে এদিক-ওদিক ঘোরাফেরা করা ,বস্ত্র তুরে চলাফেরা করা মানায় না বিধায় যেখানে -সেখানে ভিক্ষুদের বাস না করে গৌতম বৌদ্ধ বর্ষাবাস গ্রহণের জন‌্য নিদ্দেশ দিয়েছিলেন। amarbangla.tv

বৌদ্ধ বিনয় মতে,যে ভিক্ষু বর্ষাবাস যাপন করেন, তিনি কঠিন চীবর লাভের যোগ‌্য হন। বর্ষাবাস যাপন ব‌্যাতিরেকে চীবর লাভ করা যায়না। যে বিহারে ভিক্ষু বর্ষাবাস যাপন করবেনা ,সে বিহারে কঠিন চীবরদান অনুস্থান করা যাবেনা। বর্ষাবাসের জন‌্য ভিক্ষুরা সংঘারাম, বিহার ও সাধনা কেন্দ্র বেছে নেন। এ পূর্ণিমা তিথিতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা বিহারে (প‌্যাগোডা) গিয়ে বৌদ্ধকে প্রার্থনার মধ‌্য দিয়ে শীলে অধিষ্ঠিত হবেন।

আজ থেকে তিন মাস ব‌্যাপী বর্ষাবাস পালনের মাধ‌্যমে প্রত‌্যোক বিহারে বৌদ্ধ ভিক্ষুরা শীলের অধিষ্ঠিত হয়ে একই বিহারে অবস্থান করবেন।বর্ষাবাস শেষে ভিক্ষুরা ধর্মপ্রচারে বেরিয়ে পরবেন।এরপর প্রত‌্যোক বিহারে বিহারে অনুষ্ঠিত হবে কঠিন চীবর দান।আষাঢ়ী পূর্ণিমাকে ঘিরে দেশ-বিদেশের প্রতিটি বৌদ্ধ বিহারে বিভিন্ন কর্মসূচী আয়োজন করা হয়। শেয়ার করুন।