নির্ধারিত সময়ে শেষ হবে চট্টগ্রাম খাগড়াছড়ি সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ

নির্ধারিত সময়ে শেষ হবে চট্টগ্রাম খাগড়াছড়ি সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ।

আমার বাংলা টিভি ডেস্কঃ চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়ক প্রশস্তকরণ কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। করোনা পরিস্থিতিতির কারনে সড়ক উন্নয়ন কাজে কিছুটা বাধাগ্রস্ত হলেও বর্ষায় আগেই ৩৮টি কালভার্ড এর মধ্যে অধিকাংশ কালভার্টের কাজ শেষ করা হয়,যার কারনে গাড়ী চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে না। বর্তমানে সড়কের দুপাশে সড়ক সম্প্রসারণের কাজ চলছে। উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে ৩৯৯ কোটি টাকা অনুমোদন দেয় সরকার। এতে ৪টি প্যাকেজে ভাগ করে দরপত্র আহ্বান করা হয়। প্রথম প্যাকেজে ম্যাক্স ইনফ্রাষ্ট্রাকচার এবং ২,৩,৪র্থ প্যাকেজে র‌্যাব আরসি নামক প্রতিষ্ঠান কাজ পায়।
গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর ৩৯৯ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক প্রশস্তকরণ কাজের উদ্বোধন করা হয়। এর অধীনে হাটহাজারী থেকে খাগড়াছড়ির, মানিকছড়ি পর্যন্ত প্রায় ৩২ দশমিক ৫০ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্তকরণ করা হচ্ছে ।

সড়ক ও জনপথ (সওজ) চট্টগ্রাম বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জুলফিকার আহমেদ জানান, দুই বছর মেয়াদী প্রকল্পের আওতায় এ কাজ সম্পন্ন করা হবে। ৩২ দশমিক ৫০ কিলোমিটার সরু সড়কটি প্রশস্তকরণ করা হবে। বর্তমান সড়কের দ্বিগুণ আয়তন হবে নতুন সড়কটি। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটির প্রস্থ রয়েছে ১৮ ফুট। সড়কটিকে ৩৪ ফুটে উন্নীত করা হচ্ছে। সড়কের পাশাপাশি নির্মাণ করা হবে ৩০৮ মিটারের ৩৮টি আরসিসি কালভার্ট।ইতিমধ্যে ৩৭টি কালভার্টের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ৩২.৫ কিলোমিটার সড়ক বর্তমানে ২২.৫ কিলোমিটার সড়কের সাব- বেইজ পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সড়কের পাশে বিভিন্ন বাজার অংশে ৮৫০০ মিটার ড্রেন নির্মাম করা হচ্ছে। রোড সাইন-সিগন্যাল, গাইড পোস্ট, রোড মার্কিংসহ নেওয়া হবে সড়ক নিরাপত্তায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। সড়কের দুপাশে বিভিন্ন অবৈধ স্হাপনা থাকায় সড়ক সম্প্রসারণ কাজ কিছু ব্যাহত হচ্ছে । amarbangla.tv

এলাকাবাসীরা বলেন, চট্টগ্রাম খাগড়াছড়ি সড়ক খুবই গুরুত্বপূর্ণ সড়ক।এই সড়কে প্রায় সময় যানজট লেগেই থাকতো, সড়ক প্রশস্তকরনের ফলে এই সড়কে যাতায়াত করা সবাই সুবিধা ভোগ করবে – সড়ক দুর্ঘটনা অনেকাংশে রোধ হবে।
সড়কে বেশ কয়েকটি স্কুল,কলেজ,গুরুত্বপুর্ন হাটবাজার,হাটহাজারী মাদ্রাসা এবং মাইজভান্ডার দরবার শরীফ ইত্যাদিকে সড়কটি অতিক্রম করেছে ।এই সড়কটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিকল্প সড়ক হিসেবে ফটিকছড়ি, হাটহাজারী এবং খাগড়াছড়ি অঞ্চলের জনগণের যাতায়াতের এবং পণ্য সামগ্রী দ্রুত পরিবহণের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এই সড়ক ১৮ ফুট থেকে ৩৪ ফুটে পৃরশস্তকরণ হওয়ার ফলে যোগাযোগ ব্যবস্হার উন্নত হবে,ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়ক(বারৈয়রহাট) হতে চট্টগ্রাম জেলার হাটহাজারী উপজেলার সাথে উন্নত সংযোগ স্হাপিত হবে।এই সড়কের পাশে অবস্হিত চা বাগান,রাবার বাগানের উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী এবং খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি জেলার উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী চট্টগ্রামসহ সারা দেশে এই সড়কের মাধ্যমে পরিবহন সুবিধা পাওয়া যাবে ।মুল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা আহরনে সড়কটি বিশেষ গুরুত্বপুর্ন ভূমিকা রাখবে । সুবিধা ভোগ করবে এই সড়কে যাতায়াত করা সকলেই।

সিএনজি অটোরিক্সা চালক মো. আকবর বলেন, আগে এই সড়কে প্রায় সময় যানজট লেগেই থাকতো, বর্তমানে এই সড়ক সম্প্রসারিত হওয়ায় যানজন অনেকাংশেই কমে যাবে।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান র‌্যাব আরসির প্রজেক্ট ম্যানেজার নুরুজ্জামান বলেন, সড়ক সম্প্রসারনোর কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে, বর্ষার কারনে কাজে কিছুটা অসুবিধা হচ্ছে, করোনা পরিস্থিতিতে শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না তবুও নির্ধারিত সময়ে আগেই কাজ শেষ করতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

রাস্তার কাজে বিভিন্ন সুবিধা, অসুবিধার বিষয়ে সড়ক ও জনপথ (সওজ) চট্টগ্রাম বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জুলফিকার আহমেদ বলেন, প্রশস্তকরন সড়কে ৪টি বাস বে নির্মিত হচ্ছে ৪টি লোকেশনে যাতে যাত্রীরা নিরাপদে বাসে উঠা – নামা করা যায়। প্রকল্প কাজের গুণগত মান বজায় রাখার জন্য সাবক্ষনিক ভাবে দুটি ল্যাবরেটরি নিয়োজিত রাখা হয়েছে। ফটিকছড়ি সদরে একটি দ্বিতল মনোরম পরিদর্শন বাংলো নির্মান করা হচ্ছে এই প্রকল্পের আওতায়। বর্ষায় অতি বর্ষণে বা পাহাড়ী ঢলে সড়ক পানিতে তলিয়ে না যায় স্থিত সড়কের টপ লেভেল থেকে দেড় ফুট ওপরে নতুন সড়ক নির্মিত হচ্ছে ।সড়কে মসজিদ, বাজার অবৈধ স্হাপনা থাকায় মাঝে মাঝে কিছুটা বিভিন্ন মহল থাকে বাধা আসে যার কারনে সড়ক সম্প্রসারনের কাজে কিছুটা ধীর গতি হলেও নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করা হবে বলে জানান নির্বাহী প্রকৌশলী।