আমার বাংলা TV:বর্তমান সরকারের দ্বিতীয় মেয়াদের শেষ সময় চলছে। চারিদিকে আগামী সংসদ নির্বাচনের তোড়জোড়। সংস্কৃতিবান্ধব হিসেবে সুধী সমাজে সমাদৃত ক্ষমতাসীনরা তাদের প্রতিশ্রুত অনেক কাজের অনুমোদন দিয়ে যাচ্ছেন।দেশীয় সংস্কৃতিক তথা চারুকলা এবং সঙ্গীত, নৃত্য ও আবৃত্তির বিকাশে সংস্কৃতিজনদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল জাতীয় চিত্রশালার সম্প্রসারণ ও অসমাপ্ত কাজ শেষ করা। একই সঙ্গে জাতীয় সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্রের সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয়তার কথাও বলাহয়েছে বারবার।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে শিল্পকলা একাডেমির এ দুটি বিশেষায়িত ভবনের নানা সম্প্রসারণে বিশেষ প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। এরই মধ্যে কাজ শুরুর প্রক্রিয়ায়ও অগ্রগতি এসেছে। এর আওতায় একাধিক আধুনিক মিলনায়তন ও গ্যালারি নির্মাণ করা হবে। যা জাতীয় সংস্কৃতি ঐতিহ্যের সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধকরণ এবং প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।জাতীয় চিত্রশালা ও জাতীয় সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্রের সম্প্রসারণ ও অসমাপ্ত কাজ সমাপ্তকরণ’ শীর্ষক এ প্রকল্পটি গত বছরের নভেম্বরে অনুমোদন করা হয়। যার ব্যয় ১৩৭ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ধরা হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদকাল শেষ হবে ২০২০ সালের জুনে।
প্রকল্প অনুমোদনকাল থেকে বর্তমান অগ্রগতির খোঁজ-খবর নিয়ে জানা যায়, কিছুদিনের মধ্যেই কাজ সম্পাদনের জন্য টেন্ডার ডাকা হবে। এ প্রকল্পের আওতায় কাজ হবে দুটি ভাগে। একটি জাতীয় চিত্রশালায়, অন্যটি জাতীয় সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্রে।জাতীয় চিত্রশালা ভবনের সম্প্রসারণের অংশ হিসেবে বর্তমান ভবনের ওপরে আরও ৩টি তলা নির্মাণ করা হবে। যাতে আধুনিক বেশ কয়েকটি গ্যালারির পাশাপাশি একটি বড় মিলনায়তন নির্মাণ করা হবে।অন্যদিকে সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র ভবনে নির্মাণ করা হবে ৭৫০ আসনের নতুন অডিটোরিয়াম। এ ভবনের সামনে বর্তমানে যে খালি জায়গাটি রয়েছে, তাতে আরেকটি ভবন নির্মাণ করা হবে, যেটিকে সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র ভবনের সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে।
জানা গেছে, এ প্রকল্পের ডিপিপি কয়েকবার পুনর্গঠন করা হয়। যাতে বিশেষ কিছু সুপারিশ আনা হয়। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রতিবন্ধীদের যাতায়াত সহজ করার জন্য ঢালু পথ/র্যাম্প তৈরিকরণ, ডে-কেয়ার সেন্টার ও মাদার্স কর্নার রাখা।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসনে বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে একটি স্থায়ী গ্যালারির বিষয়ে বলে আসছি। যেখানে সঠিক অবস্থায়, সঠিক তাপমাত্রায়, সঠিক আলোয় সংগৃহীত ছবিগুলো সব সময় থাকবে।কারণ সংগৃহীত ছবি সঠিকভাবে সংরক্ষিত না হলে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আমার জানা মতে, এখন পর্যন্ত শিল্পকলা একাডেমি থেকে দেশের বিভিন্ন প্রজন্মের শিল্পীদের প্রায় ৩ কোটি টাকার ছবি কেনা হয়েছে। একটি স্থায়ী গ্যালারি হলে এ ছবিগুলোর সঠিক সংরক্ষণ নিশ্চিত হবে।
শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী বলেন, দেশের চারুকলার (চিত্রকর্ম, ভাস্কর্য, প্রাচ্যদেশীয় চারুকর্ম ইত্যাদি) সংরক্ষণ এবং প্রদর্শনীর আরও বিস্তৃতকরণে জাতীয় চিত্রশালার সম্প্রসারণ জরুরি। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা প্রদর্শনীর আয়োজনে ভবনে আরও অবকাঠামো নির্মাণ ও অন্যান্য সুবিধাদি বাড়ানোর তাগিদও রয়েছে।পাশাপাশি সঙ্গীত, নৃত্য ও আবৃত্তিশিল্পীদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধি, প্রশিক্ষণ ও প্রদর্শনীর জন্যও অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি ও বস্তুগত সুবিধাদি নিশ্চিতকরণে আমরা উদ্যোগী হয়েছি।
আমার বাংলা নিউজ ডেক্স অক্টোবর ০৬/২০১৮